• শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪২৯

সারা দেশ

কালীগঞ্জে ৪ তলা ভবনে আগুন, স্কুল শিক্ষিকা দগ্ধ

  • ''
  • প্রকাশিত ০৪ মার্চ ২০২৪

কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি:

ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ সোনালী ব্যাংক ভবনে আগুন লাগার বিষয়টি সাধারন মানুষের মনে নানা ধরনের প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কালীগঞ্জ কৃষি ব্যাংক ভবনটি ৪ তলা বিশিষ্ট। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ভবনের জেনারেটর থেকে রহস্য জনক ভাবে আগুনের সুত্রপাত ঘটে।

কক্ষের পশ্চিম-পূর্ব দিকে রোববার বিকাল ৫ টার দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়। এসময় ব্যাংকের কর্মরতরা সবাই কাজে নিয়োজিত ছিল ও আগুন লাগার খবর পেয়ে তারা অফিসের দরজা বন্ধ করে দেয়। ফায়ার সার্ভিস খবর পেয়ে ৪ টি ইউনিট ১ ঘন্টার মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে সক্ষম হয়। এ আগুন লাগার কারণ এবং এটা উদ্দেশ্য প্রনোদিত কিনা, তার খতিয়ে দেখার প্রয়োজন। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের কেউ আমাদের আগুনের খবর দেয়নি,বাইরের লোকজন আগুন দেখে খবর দিয়েছে। তাছাড়া ব্যাংকের অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা খুবই নড়বড়ে অবস্থা। তাদের ফায়ার অ্যালার্মও কাজে ব্যবহার করেনি ফলে ব্যাংকের অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা দেখে সাধারন মানুষ হতাশ।

কালীগঞ্জ ফায়ার সাভিসের স্টেশন অফিসার শেখ মামুনুর রশিদ বলেন, এই ভবনটির ৪র্থ তলার ভাড়াটিয়া সুব্রত ব্যানার্জি জানায়, বিকালে ভবনটির নিচতলায় সিঁড়ি রুমে জেনারেটর শর্ট সার্কিট হয়ে নাকি আগুনের সুত্রপাত ঘটেছিল। সেখানে ছিল গাড়ির ৩/৪ টি পুরাতন টায়ার, আগুনের মাত্রা বেশি হলে টায়ারে আগুন ধোরে যায়। এ সময় তড়িঘড়ি করে চারতলা থেকে নিচে নামতে গিয়ে স্কুল শিক্ষিকার মুখমণ্ডল ও হাত পা পুড়ে ঝলসে যায়। আহত সোমা ব্যানার্জি কালীগঞ্জ গোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। এ সময়ে অগ্নিকাণ্ডে আহত স্কুল শিক্ষিকাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায় পরে যশোর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে ঢাকায় উন্নত চিকিতসার জন্য প্রেরন করেন। অবশ্য জেনারেটর ও টায়ার পোড়া ছাড়া তেমন কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

কালীগঞ্জ ব্যাংক ভবনে আগুন একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা তাই সেখানে এই আগুনের ঘটনা বিস্ময়কর এছাড়া ফায়ার সার্ভিস কেন, ব্যাংকের নিজস্ব অগ্নিনির্বাপন ব্যাবস্থার নেভানোর কথা ছিল কিন্তু সেটা তারা পারেনি। কালীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট। আগুনের তীব্রতা বেশী থাকায় ঝিনাইদহ ও কোটচাঁদপুর থেকে আরও দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে আসে। প্রায় এক ঘন্টা চেষ্টায় আগুন নেভানো সম্ভব হয়।

ভবনটি চারতলা বিশিষ্ট এবং নিচতলায় একটি সরিষা ও সোয়াবিন তেলের গুদাম, দ্বিতীয় তলায় কৃষি ব্যাংক এবং ৩য় ও ৪র্থ তলায় আবাসিকে অনেকে পরিবার বসবাস করে। অবশ্য বলা হচ্ছে নিচতলার গুদাম ঘরে থাকা জেনারেটর থেকে আগুনের সুত্রপাত হয়। সে সময় প্রচন্ড ধোয়া উপরের ভবন গুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। তখন প্রচন্ড গরমে ও ধোয়ায় ওই স্কুল শিক্ষিকা জীবন বাচানোর জন্য ও ভয়ে উপর থেকে নিচেয় নামার আসার সময় আগুনে পুড়ে যায়। শিক্ষিকার শরীর, ২ হাত, ২ পা ও মুখ পুড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ও ঝলসে গেছে।

অবশ্য তেল গুদাম ও ব্যাংকের গাফরতির কারনে এ আগুনের সুত্রপাত ঘটেছে,তারা জেনারেটর ঠিকমত মেরামত করে না।

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার সম্পা মোদক জানায়, আগুনে পুড়ে আহত শিক্ষিকার হাত পা ও মুখ মন্ডল পুড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। মনোরঞ্জন সাহার চারতল ভবন যখন আগুনের লেলিহান শিখা থেকে উৎপত্তি হওয়া কালো ধোয়া প্রতি তালার বারান্দা কিংবা জানালা দিয়েবের হচ্ছিল তখন রাস্তায় দাড়ানো হাজারো মানুষের মধ্যে অনেকেই ব্যস্ত ছিলেন সেলফি তুলতে,ভিডিও করতে কিংবা ফেসবুকে লাইভ করতে। কিন্তু এ সময় নিজের জীবন বাজি রেখে আগুন নেভাতে ও উদ্ধার কাজে সহযোগিতা করতে হাজির হন মধুগঞ্জ বাজারের মৃত ফজলুল করিমের ছেলে মোরাদ হোসেন জোয়ার্দার বাবলু। মানবিক এই মানুষটি ভবনের চতুর্থ তলার একটি ফ্ল্যাটে আটকে পড়া স্কুল শিক্ষক সোমা ব্যানার্জিকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব করে আনে।

সেই দুঃসাহসিক উদ্ধার তৎপরতার লোমহর্ষক কাহিনী সম্পর্কে জানতে মোরাদ হোসেন বলেন, বাড়ির ছাদ থেকে কালো ধোয়া দেখে ঘটনাস্থলে আসি। ফায়ার সার্ভিসের লোকেরা আগুন নিভিয়ে ফেলেছেন। সকলে ধারণা করছিল ভবনে কেউ আটকা নেই। তবুও আমার মনের মধ্যে কেন জানি হচ্ছিল কেউ আছে কিনা দেখা দরকার। এই ভেবে সিড়ি দিয়ে উপরে উঠার চেষ্টা করেও প্রথমে প্রচন্ড তাপের কারণে ব্যর্থ হই। ফায়ার সার্ভিস স্টেশন মাস্টার মামুন ভাইকে সাথে নিয়ে ধোয়া ও গরমের মধ্যেও চতুর্থ তলা অব্দি উঠে যায়। কোথাও কিছু দেখা যাচ্ছিল না।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads